অনুভূতি

চক্রব্যূহ

মানুষ না কি জীবনের চক্রব্যূহ থেকে মুক্তি চায় অথচ বাস্তবিক ক্ষেত্রে এই জীবনটাকে প্রাণপণে আঁকড়ে ধরে থাকে, কিছুতেই চায় না ছাড়তে। জীবনে আনন্দ, বিষাদ, যন্ত্রণা, একঘেয়েমী সবকিছুই আছে কিন্তু তার মধ্যেই অদভুত এক ভালো লাগা আছে তাই মানুষ জীবনের এই চক্রব্যূহের যাঁতাকলে পিষতে থাকলেও কি এক অমোঘ টানে বারবার এই পৃথিবীর বুকে ফিরে আসে। হয়তো বা জীবন থেকে মুক্তির আনন্দ অপার্থিব এবং সেটি মানুষের অন্তিম গন্তব্যস্থান তবে চাইলেও মানুষ মুক্তি পায় না। জীবন ও মুক্তির সন্ধিক্ষণে দ্বাররক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জয়দ্রথ, অভিমন্যু রূপী জীবনকে বারবার জয়দ্রথের হাতে নিহত হতে হয়, মুক্তির স্বাদ তার কাছে অধরাই থেকে যায়।

তুমি ঠিকই বলেছ
অনেকদিন কিছু লিখিনি
মনের সাথে কথা বলিনি
একান্তে সময় কাটাইনি
নিজের সাথে।

জান, জীবনটা মাঝে মধ্যেই
বড় একঘেয়ে লাগে
সেই পুরানো মুখ বারবার দেখা
একই কথা বারবার শোনা
বারবার বলা
একই পথে বারবার চলা
রোজ একই কাজের পুনরাবৃত্তি করা
জন্ম লগ্ন থেকে চক্রিল ব্যূহে ঘোরা
একঘেয়ে, বড় একঘেয়ে লাগে।

অভিমন্যুর মত আটকে রয়েছি
জীবিনের এই বিচিত্র চক্রব্যূহে।
পারছি না, কিছুতেই পারছি না বেরুতে,
চক্রব্যূহের দ্বারে দাঁড়িয়ে
সংসারের পিছুটান
জয়দ্রথ হয়ে।

বীর অভিমন্যু সেও পারেনি কুরুক্ষেত্রে
চক্রব্যূহ ভেদ করতে
দীপ নিভেছিল তার
জয়দ্রথের হাতে।

ছাপোষা মানুষ আমি
ছাপোষা জীবন
একঘেয়েমিতে শুরু
একঘেয়েমিতেই শেষ
চক্রব্যূহে পিষেই যাব
নিয়েছি মেনে।