সমুদ্র মন্থন

সমুদ্র মন্থনে অমৃতের সাথে
ওঠে তীব্র বিষাক্ত হলাহল,
কন্ঠে ধারণ করে তাকে
মহাদেব নীলকন্ঠ নামে
পূজিত আজ এই ধরাধামে।
এ গল্প আমাদের শোনা,
এ গল্প আমাদের জানা,
অথচ এরই মধ্যে নিহিত
সমুদ্রের ব্যথা, যন্ত্রনার কথা,
সে কথা কেউ বলে না।
দেবাসুরের অমৃত লাভের লোভে
কর্ষিত,মথিত হয়েছে সমুদ্র বারবার
অথচ তার কাছে চাইলেই হাসিমুখে
অঞ্জলি ভরে অমৃত করত সে দান
নিজেকে সম্পূর্ণ নিঃশেষ করে
হলাহল কে বুকে ধরে।
কোন দরকার হত না মহাদেবের
হলাহল পান করে নীলকন্ঠ হবার
তীব্র হলাহলের জ্বালা গলায় ধরার।
সুতীব্র হলাহলের দহন তো এতকাল
মুখ বুজে সহ্য করেছে সমুদ্র,
অমৃতও ছিল তার বুকে ধরা,
তবু কোনদিন অমরত্ব লাভের
বাসনা ছিল না তার মনে
যে অমৃত চাইলেই পাওয়া যেত
তার জন্য কি দরকার ছিল
এই সমুদ্র মন্থনের বারবার,
সামান্য এইটুকু সম্মান
প্রাপ্ত ছিল না কি তার?
সবাই বলে নীলকন্ঠের গল্প
সমুদ্র মন্থনের কথা
অমৃত পান করে দেবতাদের
অমরত্ব লাভের কাহিনী
কিন্তু, সমুদ্রের প্রতি অবিচারের
এই ভীষণ নিষ্ঠুরতা
তার যন্ত্রণা ব্যথার ইতিহাস
তার নিঃস্বার্থ দানের কথা
কেউ কখনও করেনি মনে
সমুদ্র রয়ে গেছে নেপথ্যের অন্তরালে
অবহেলিত, উপেক্ষিত হয়ে।