অদ্ভুত মানুষ
সে ছিল এক অদ্ভুত মানুষ,
নাম ধাম আশ্রয়, ছিলনা কিছুই,
ইকবাল, গোপাল, জন যে নামেই ডাক,
হাসি মুখে সব ডাকেই সাড়া সে দিত।
,বিপদে আপদে ছুটে আসত সদাই
সে ছিল এক অদ্ভুত মানুষ।
কখনো মন্দিরে গিয়ে গাইত কীর্তন
নতুবা মসজিদে গিয়ে পড়ত নমাজ
অথবা গীর্জায় যীশুর মূর্তির সামনে
ধ্যানমগ্ন তাপসের মত থাকতো বসে ।
কি তার ধর্ম জিজ্ঞাসা করলে,
হৃদয়ের দিকে আঙ্গুল দেখাত।
বলত হেসে মানুষ হয়ে জন্মেছি ভাই
এর চেয়ে বড় ধর্ম আমার জানা নেই।
মানুষ হিসাবে সে ছিল বড়ই অদ্ভুত।
শ্মশানযাত্রী হয়ে শ্মশানে যেত
কবরস্থানে গিয়ে ধূপ জ্বালাত
কখন কোথায় যে থাকত সে
দরকারে কিন্তু সবাই পেত পাশে ।
কেউ খেতে দিলে তার খাওয়া জুটত
না হলে অভুক্তই ঘুরে বেড়াত।
রাগ, অভিমান, অভিযোগহীন একটা মানুষ
এইভাবেই সে কাটাত যে দিন
সে ছিল সত্যিই এক অদ্ভুত মানুষ।
গরমে নিঃসাড়ে ঘুমাত গাছের তলায় ,
কালবৈশাখীর ঝড়ে উর্দ্ধবাহু হয়ে
মাঠে ময়দানে ক্ষ্যাপা নেচে বেড়াত।
বর্ষার অঝোরে বৃষ্টিধারায়
বৃষ্টিটাকে আষ্টেপৃষ্টে জাপটে ধরে
খোলা মাঠে কাকভেজা ভিজত যে সে।
চোখেমুখে থাকত তার তুরীয়ানন্দ
অদ্ভুত মানুষের মনে ছিল সদাই আনন্দ।
প্রকৃতির রূপে রসে থাকত মজে
সদা হাস্যময় সে অদ্ভুত মানুষ
সবাইকে প্রাণ দিয়ে ভালবাসত।
হঠাৎ হঠাৎ কোথায় হারিয়ে গিয়ে
আবারই আচমকা আসত ফিরে
একদিন যে সেই গেল আর এল না
নিরুদ্দেশের পথে হয়ত বা পাড়ি দিল।
কেনই বা এসেছিল কেনই বা গেল
মায়ার বাঁধনটা আজও রয়ে গেছে,
সে এক অদ্ভুত মানুষ ছিল।