বাড়িটা
রাস্তায় চলার পথে নাঝে মধ্যেই পোড়ো জীর্ণ বাড়ী দেখা যায়, শহরের বুকে যেন ভূতুড়ে বাড়ী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেদিন রাস্তায় চলতে চলতে হঠাৎ ই এরকম একটা পোড়ো বাড়ীর সামনে পা টা আটকে গেলো। শহরের উপকন্ঠে বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে দাঁড়িয়ে বাড়ীটা। চারিদিকে ঝোপঝাড়, বনজঙ্গল এবং বট, অশ্বত্থ গাছের ঝুরি বাড়ীটাকে যেন আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছে। বেশীর ভাগ জায়গা থেকেই পলেস্তারা খসে পড়েছে আর পুরানো ভাঙ্গা ইঁট তার মধ্য থেকে যেন দাঁত বার করে হাসছে।
বাড়ীটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনের কেমন যেন ভাবান্তর হল, মনে হল বাড়ীটা যেন কিছু বলতে চায়, তার যৌবনের কথা, হাসি কান্না দিনের কথা। তন্ময় হয়ে ভাবছিলাম আর তার কথা যেন শুনছিলাম। সম্বিৎ ফিরল গাড়ীর হর্ণের আওয়াজে, আবার এগিয়ে চললাম।পিছনে পড়ে রইলো এক পোড়ো বাড়ী অনেক ইতিহাস, অনেক অব্যক্ত যন্ত্রণা বুকে ধরে।
শতাব্দী প্রাচীন বাড়ীটার
কালের নিয়মে আজ ভগ্নদশা,
কেউ ফিরেও তাকায়না।
অথচ এই বাড়ীটিও একদিন নবীন ছিল
তারও যৌবন ছিল,
প্রাণের, জীবনের উজ্জ্বলতা ছিল।
কত টুকরো টুকরো ঘটনার সাক্ষী
বাড়ীর প্রতিটি ইঁট, কাঠ, জানালা।
কত রাগ অভিমান দুঃখের সাথে
মিষ্টি প্রেমের গল্প,
ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আনাচে কানাচে
আজ তার কেউ খবর রাখে না।
ঝাপসা দৃষ্টিতে সে দেখে নতুন প্রজন্মকে,
তার কানে আজও বাজে
বৈঠকখানার নহবতের সুর ।
তারি তালে তালে, একটি একটি করে
খসে খসে পড়ে ইঁট ।
এমনি করেই সে মিশে যাবে মাটীর সাথে,
ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই হবে তার।