মৃত্যুদূত
আজ থেকে বহুবছর বাদে
হয়তবা কোনও প্রৌঢ় লেখক
লিখে চলেছেন আজকের কথা
এসেছিল এক ভাইরাস ঝড়
এই পৃথিবী, এই শহরের বুকে
কোভিড -১৯, এই নাম নিয়ে।
সারা পৃথিবীর মানুষ
সেই প্রথম বার
ঘরে লুকিয়ে বসে ছিল বহুদিন,
একেবারে গৃহে অন্তরীন হয়ে।
একটা ছোট্ট অদৃশ্য ভাইরাস
তার ভয়ে কাঁপছিল পৃথিবীর মানুষ,
বিধাতার সর্ব্বোৎকৃষ্ট জীব,
বিধাতাকেই যে অস্বীকার করে।
জনজীবন ছিল একেবারে স্তব্ধ
রাস্তাঘাটে ছিল না গাড়ী ঘোড়া
ট্রেনের পটরী ছিল খালি,
আকাশে উড়োজাহাজ সে ও ওড়েনি
অফিস কাছারী সব ছিল বন্ধ।
মুখে মাস্ক পড়ে কিছু মানুষের
পথে নামা অতি দরকারে,
ত্রাণ শিবির ছিল সারা পৃথিবীতে
ভুখা পেটে কেউ যাতে না মরে।
এত করেও দেওয়া যায়নি সামাল
লাখ লাখ মানুষ মরেছে রোগে অনাহারে।
হাসপাতাল ছিল রূগীতে ভরা
তার সাথে পাল্লা দিয়ে মৃত্যুর মিছিল,
শ্মশানের নিস্তব্ধতায় ভরা চারিদিক।
কতশত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী
সেবাধর্মে নিবেদিত প্রাণ হয়ে
অসময়ে অকালে গিয়েছে ঝরে,
তাদের সেই আত্মবলিদানের কথা
বিস্মৃতির অন্তরালে হারিয়ে গিয়েছে,
সেই ব্যথা শুধু অতীত জানে।
যে কথা ইতিহাস বলবে না কোনদিন
কোভিড-১৯ এর সদার্থক দিক।
আকাশ হয়েছিল নির্মল নীল
বাতাস ছিল পবিত্র, অক্সিজেনে ভরপুর,
নদী নালা ঝর্ণা সমুদ্রের জল
নিয়েছিল স্বচ্ছ্ব টলটলে রূপ।
জলজ প্রাণীরা খেলেছে মনের আনন্দে
বনের পশু পাখী পেয়েছিল স্বাধীনতা
অবাধে ঘুরে বেড়িয়েছে এদিক ওদিক,
মানুষের অত্যাচারে ক্লান্ত পৃথিবী
ফেলেছিল স্বস্তির নিঃশ্বাস কিছুদিন
বাড়িয়ে নিয়েছে তার জীবনীশক্তি।
মারণ ভাইরাস শুধূ নেয়নি ছিনিয়ে
দিয়ে গেছে আরও বেশি এই পৃথিবীকে,
যদিও ঘটেছে সেসব নিঃশব্দে, অগোচরে।
পৃথিবীর মানুষ সে সব রাখবে না মনে,
শুধু লেখা থাকবে ইতিহাসে কোভিড -১৯
এসেছিল পৃথিবীতে মৃত্যুদূত হয়ে।