স্থানুবৎ
বসে বসে পুরানো দিনের কথা ভাবা, তাকে ছোঁয়ার চেষ্টা।
অনেকদিন বাদে খোলা আকাশের নীচে
মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিলাম প্রাণভরে
ঠিক সেই ছেলেবেলার আনন্দে।
এখন শুধু বেলাটা পড়ে আছে, ছেলেটা নেই
ছেলেটা বেলাকে ছেড়ে কোথায় যে চলে গেল কে জানে।
বেলা বসে থাকে আনমনে
সে ও বয়ে যায় নিজের মতন করে।
আমি পড়েছি ভীষণ ঝামেলায়
না পাচ্ছি ছেলে আর বেলা কে একসাথে
না পারছি ওদের ছেড়ে থাকতে
এইসব ভাবতে ভাবতেই সময় যাচ্ছে কেটে
বেলার সাথে তাই আমিও যাই বয়ে
খালি মাঝে মাঝে মনে মনে ওদের
একসাথে পাওয়ার ইচ্ছা জাগে মনে।
এইভাবেই দিনগুলো কাটছিল বেশ
হঠাৎই কেমন যেন বেসুরো বাজছে
কোথা থেকে বার্ধক্যের এক সুর এসে
মনের মধ্যে বাসা বাঁধার চেষ্টা করছে
কানের কাছে তার প্যাঁ প্যাঁ তানটা বাজিয়েই চলেছে
অহরহ, চব্বিশ ঘন্টা, থামাচ্ছে না কিছুতেই
বিরক্তিকর, সত্যি খুব বিরক্তিকর।
প্রথমদিকে বিরক্তি বোধ করলেও
সেই সুরেই এখন দেখি মনটা তাল মেলাচ্ছে
মাঝেমধ্যে দেখি শরীরটাও সেই তালে নাচছে
আমাকে একেবারে বাঁয়ে করে দিয়ে।
বেলাটা এদের সঙ্গী পেয়ে আবার বেশ চনমনে
আমি খালি বোকার মত ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে দেখি
ভাবি হচ্ছেটা কি?
আমার ঘর বাড়ি সব বেদখল হয়ে গেল?
ভাবলাম এর প্রতিবাদ করতে হবে
ও হরি, সেখানেও দেখি হাজারো ঝামেলা
মন এই মুহূর্তে এক কথা বলছে তো পরমুহূর্তে অন্য কথা
খালি দোলাচলে দুলেই চলেছে
ওর সাথী আবার শরীর, বেলা, ভাবনা সবাই
অগত্যা নিরুপায় হয়ে গেলাম আমির কাছে
গিয়ে বললাম এই অন্যায়ের বিহিত চাই।
কে যে নিরন্তর বকে চলেছে কে জানে
শূন্যতার মধ্য থেকে এক আওয়াজ ভেসে আসছে
হাজারো অভিযোগ অনুযোগ নিয়ে
সেখানে আমি নেই, শরীর নে্ই, মন নে্ই ভাবনা নেই
চারিদিকে শূন্যতায় ভরা, কোন কিছুই নেই
এক মহাশূন্যের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে সবকিছু
অদ্ভুত অপার্থিব নীরবতা, গভীর অনুভূতি
বসে আছি স্থানুবৎ।