ইচ্ছা
প্রাতঃভবনে অনেকেই বেরোন এবং আমিও বেরুই। যাতায়াতের পথে একটা বানরলাঠি গাছ পড়ে যেটা হলুদ ফুলে ভরা থাকে। সেদিন দেখি সেই গাছটির তলায় এক ভবঘুরে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। থমকে দাঁড়ালাম, প্রথম দেখলাম তাকে।,অবাক বিস্ময়ে দেখলাম যে রাজ্যের শান্তি তার চোখেমুখে। মনে মনে একটা একটা ভাবনা গ্রাস করলো। মনে হল যে এক সহায়সম্বলহীন, কপর্দকহীন, আশ্রয়হীন ভবঘুরের এত শান্তির ঘুম আসে কি করে যেখানে আমাকে ঘুমের জন্য মাঝে মধ্যেই ঘুমের ওষুধ খেতে হয়। ওকে দেখে বড় হিংসা হল আর তার বহিঃপ্রকাশ এই লেখায়।
রাস্তার ধারে বানরলাঠি গাছের তলায়
শুয়ে আছে এক ভবঘুরে সকালবেলায়
কাল রাত্রেও হয়তো বা সে ছিলো ওখানেই
হয়তো বা ওটাই ওর আস্তানা, বাসা
ছিন্ন বসন, নোংরা ভীষণ, উষ্কখুস্ক চুল
দেখে মনে হল আছে সে বড়ই খাসা।
বানরলাঠির হলুদ ফুলের পাপড়িগুলো
দেখি ওর সারা শরীরে পড়েছে ঝরে
খুব নিশ্চিন্তে অকাতরে ঘুমাচ্ছে সে
যদিও এটি ফুলের শয্যা নয় কখনও
তবু, ফুলের পাপড়ির নরম আদুরে কোমল স্পর্শে
আপাদমস্তক তার রয়েছে মুড়ে
থাকি আমি পাকাবাড়ীর ছাদের তলায়
স্বাচ্ছন্দ্য আর যান্ত্রিকতায় দিন কেটে যায়
সবকিছুর মধ্যে থেকেও যেন কিছুই যে নেই
নিশ্চিন্তে শান্তির ঘুম খুঁজে বেড়াই
একবার যদি ভবঘুরে পারতাম হতে
বানরলাঠি গাছের তলায় পেতাম নিজেকে ।