জীবন

নষ্টা

নষ্টচরিত্রের মেয়ে বলে
তোরা আমাকে গাল দিস,
ঘেন্নায় মুখ ফিরিয়ে নিস
যতসব বেইমানের দল।

তোরা সমাজের বাবু লোক
আর, আমি এক নষ্টা নারী।
কেই বা আমার কথা শুনবে
কেই বা আমার কথা বিশ্বাস করবে,
তোদের তো নাড়াচাড়া আমার
শরীরটা নিয়ে
লোকচক্ষুর অন্তরালে, সন্তর্পনে।
তাই তোরা থেকে যাস ভদ্রলোক
আর আমি পরিত্যক্তা,
সমাজের নষ্টা।

অথচ আমিও তো
বাঁচতে চেয়েছিলাম,
ঘর বাঁধতে চেয়েছিলাম।
তোদের মত এক ভদ্রলোককে
মনপ্রাণ দিয়ে বিশ্বাস করে,
বাড়ী থেকে পালিয়েছিলাম।
মা বাবাকে দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে
এক অলীক স্বপ্নে ভেসে গিয়েছিলাম।

আমার ভালবাসা, বিশ্বাস
ধর্ষিত হয়েছিল সেইদিন,
তোদেরই মতন এক ভদ্রলোকের হাতে।
ভালবাসার অন্তরালে যে লালসা ছিল
বিন্দুমাত্র বুঝতে পারিনি আমি,
বয়স তো অনেক কম ছিল
চোখে যে রঙ্গীন স্বপ্ন ছিল।

তারপর হাতবদল আর
রোজ ধর্ষিতা হতে হতে,
সেটাই যেন অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে,
শরীরে বসন আর ভাল লাগে না।
নগ্নতাকেই আঁকড়ে ধরেছি
নগ্নতাকেই ভালবেসে ফেলেছি
মন বলে কিছু নেই আর।

চীৎকার করে বলতে ইচ্ছা করে
আমার এই অবস্থার জন্য দায়ী,
তোদের মতন ভদ্রলোকের ভেকধারী
একদল শয়তান।
তোরা শুধু এটা ভুলে যাস যে
তোরা যদি আমার শরীরটাকে জানিস,
আমিও তোদের প্রতিটা রোমকূপ চিনি।
আমি যদি নষ্ট মেয়েমানুষ হই
তবে তোরা কেন নয় নষ্টলোক,
কেন তোরা সমাজে ভদ্রলোক?

চোখ জলে ভরে আসে
তাও চুপ করে থাকি,
মেয়ে হয়ে জন্মানো কি অভিশাপ?
শাপমুক্তি একদিন ঘটবেই ঘটবে,
সেদিন আমাকে কেও যদি
নষ্টচরিত্রা বলে, ঘেন্না করে
তোকেও বলবে তুই নষ্টলোক।
সেদিন বুঝবি নরকের যন্ত্রণা কাকে বলে?
ততদিন থাক তোরা ভদ্রলোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *