প্রকৃতি

কে জানে

আজকাল মাঝেমধ্যেই ভোর সকালে পাখীর প্রথম ডাকের সাথে ঘুম ভেঙ্গে যায়। জানলার ফাঁক দিয়ে ঊষার আলো একটু হলেও অন্ধকার ঘরকে আলোকিত করে। আধোঘুম ভাঙ্গা চোখে কুয়াশায় ঘেরা প্রথম দিনের আলোয় মোড়া পৃথিবীকে বড় মায়াবী লাগে। ওই অপার্থিব সৌন্দর্য্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আবার কখন যে ঘুমের জগতে চলে যাই নিজেই জানি না। যখন ঘুম ভাঙ্গে তখন দেখি যে ফটফটে রোদ্দুরের আলোয় ঘর ভেসে যাচ্ছে। ধড়মড় করে উঠে বসে পড়ি, কিন্তু মনের মধ্যে সেই ঊষার মায়াবী ছন্দের রেশ বাজতেই থাকে।

তবে প্রতিবারই যে ঘুম ভাঙ্গার পর ঘুমিয়ে পড়ি তা কিন্তু নয়। মাঝে মধ্যে উঠে বসে গায়ে একটা চাদর চাপিয়ে বাইরের ব্যালকনীর চেয়ারে এক কাপ ধূমায়িত চা নিয়ে বসি। রাত কেটে গিয়ে ভো্র হয়, পাখীদের কিচির মিচির শব্দের সাথে নিস্তব্ধ নিশুতি রাত কুয়াশার চাদর সরিয়ে ধীরে ধীরে জেগে ওঠে। রাতের নিস্তব্ধতা আর শূন্যতা থেকে দিনের আলোর কোলাহল পূর্ণ পূর্ণতায় উত্তরণ চোখের সামনেই ঘটে আর মন্ত্রমুগ্ধের মত তা চেয়ে চেয়ে দেখি। সৃষ্টির আদিকাল থেকে দিন রাত্রির এই খেলা চলেছে, চঞ্চল আনমনা মন তাই ভেবেই চলে। অনেক অচেনা অজানা প্রশ্নের উত্তরের আশায় এদিক ওদিক দৌড়ে বেড়ায়। কোনদিন কি তার উত্তর পাবে, কে জানে?

পাখীর কিচির মিচির শব্দে
রোজই ভাঙ্গে ঘুম, ঠিক ঊষাকালে
দেখি, জানলার ফাঁক দিয়ে মারছে উঁকি
সূর্য্যের একফালি সোনালী আলো
কোনটা যে বেশী ভালো, কে জানে?

পাখীদের কেউ কি ভাঙ্গায় ঘুম
না ওরা নিজেরাই জাগে?
পাখীরাও কি ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে
অথবা দিবাস্বপ্ন যাকে বলে
কার কাছে পাব জবাব, কে জানে?

আকাশের তারারাও টুপ করে ঝরে
ঝরে কোথায় যে পড়ে
হতে পারে মৃত, তবু সে তো তারা
যদি কেউ দিতে পারে একটুকরো
কে যে এনে দেবে, কে জানে?

জীবনে অনেক কিছুই হল না পাওয়া
যদিও পেয়েছি তার বহুগুণ বেশী
বার বার আমি চাই আসতে ফিরে
বিধাতার পৃথিবীর এই সুন্দর নীড়ে
আশা কি পূরণ হবে, কে জানে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *