মাধুতী
বেশ কিছুদিন আগেকার কথা, তখন কর্ম্মজীবনের শেষ প্রান্তে।বহুদিন বাদে কলকাতার বাইরে কর্ম্মসূত্রে গিয়ে দেখি অনেক নতুন মুখ, কমবয়সী ছেলেমেয়ের সংখ্যাই বেশী। ধীরে ধীরে সবার সাথেই আলাপ হল। এরকম ই একটি অল্পবয়সী মেয়ে মাধুতী, ত্রিপুরার মেয়ে।নামটা শুনেই আমার খুব ভাল লেগেছিল। একদিন সবাই মিলে অবসর সময়ে বসে গল্প করছি, তখন মাধুতী জানতে চাইল যে অবসর সময়ে আমি কি করি। বললাম যে গল্প বই পড়া, লেখালেখি করে সময় কাটাই। আমি সময় কি করে কাটাই এই প্রশ্নের সম্মুখীন আমায় প্রায় সব জায়গাতেই হতে হয় আর স্বভাবতঃই একই জবাব দিই। এইবার মাধুতীর জিজ্ঞাস্য যে কি লিখি। হেসে বললাম, এই যে তোমাদের সাথে আলাপ হল, কেমন লাগল, জায়গাটা কেমন এইসব।আমি ওকে কথা দিয়েছিলাম যে ওর নামটা নিয়ে কিছু একটা লিখব। মাধূতী নামটা কেন্দ্রবিন্দু করে নিজের ভাবনার বহিঃপ্রকাশ এই লেখা।
বিকালের পড়ন্ত আলোয়
তাকে প্রথম দেখেছিলাম
সরল্প্রাণা প্রাণবন্ত এক
পাহাড়ী কন্যা।
সারা শরীর দিয়ে তার
লাবণ্য যেন ঝরে ঝরে পড়ছে।
অপরূপ সুন্দরী সে হয়ত নয়
তবে তার সৌন্দর্য্য মন টানে
তাকে দেখলে মনে এক
প্রশান্তি আসে।
পাহাড়ের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে
মানুষ যেমন আবেশাবিষ্ট হয়
ঠিক তেমনি।
বড় ইচ্ছা হল তার সাথে
আলাপ করতে,
কাছে গিয়ে তার নাম
জিজ্ঞাসা করলাম।
প্রথমে একটু লজ্জাই পেল
তারপর মিষ্টি হেসে বলল মাধুতী,
আমিও আমার পরিচয় দিলাম।
ব্যস ওইটুকুই, তারপরে আমি
আবার হাঁটা লাগালাম
পাহাড় দেখার নেশায়।
জানিনা মাধুতী নামের মধ্যে
কি সৌন্দর্য্য আছে?
কিই বা এর মানে
কেই বা নামটা রেখেছে।
তবে এর মধ্যে আশ্চর্য্য একটা
ভালোলাগা আছে
আছে একটা মাদকতা ।
এই নাম আর প্রকৃতির সৌন্দর্য্য
কোথাও যেন একাত্ম হয়ে গেছে।
চলার কোনও শেষ নেই
এ পথ চলা নিরন্তর
চলতেই থাকবে।
চলার পথে মাধুতীরা এক প্রেরণা
প্রকৃতিকে বোঝবার, প্রকৃতির সাথে
একাত্ম হবার।
পার্থিব কামনা, বাসনার বাইরে
এ এক স্বর্গীয় সুখ,
এ সুখ মনের গভীরে থেকে যায়
মনের গভীরে এক দাগ কেটে যায়
জীবনের সার্থকতা এখানেই।