পুরানো দিন
ছোটবেলাকার কথা ভাবলেই মনটা কিরকম উদাস হয়ে যায় আর বারবার মনে হয় যে একবার সেই দিনগুলিতে যদি ফিরে যাওয়া যেত। সে সময় হয়তো এতো বড় বড় বাড়ী-ঘর, চওড়া রাস্তা,চোখ ধঁধানো ইমারত বা যানবাহনের বাহার ছিলো না কিন্তু চারিদিক সবুজ শ্যামলিমায় ভরা ছিলো, মানুষে মানুষে ছিলো অটুট বন্ধন আর সরল জীবন যাত্রা । রাস্তার দুই ধার বড় বড় ফুলের গাছে ভরা থাকতো, রাস্তা ফুলে মোড়া থাকতো, পাখীর গানে, শিশুদের কলকলানিতে চারিদিক মুখরিত হতো আর সন্ধ্যের সময় অস্তগামী সূর্য্যের আলোয় এক মায়াবী পরিবেশের সৃষ্টি হতো। সময়ের সাথে সাথে জায়গার আমূল পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু মন খুঁজে ফেরে সেই ছোটবেলাকার সুন্দর দিনগুলি, সেই শান্তির জায়গা।
রাস্তার দুই ধারে
বড় বড় পুরানো গাছ ছিল
সবুজে ভরা ছিল চারিদিক
গাছে পাখী ছিল, ফুল ছিল, ফল ছিল
আর ছিল বাতাসের সাথে সাথে
পাতা নড়ার শব্দ
পাতা ঝড়ার শব্দ।
পলাশ, শিমূল, রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া
আরও কত নাম না জানা ফুলে
গাছগুলো ভরে থাকত
রাস্তার দুই ধার
ঝরে যাওয়া ফুলে মুড়ে থাকত।
পাখীদের গান ছিল
বাচ্চাদের ঢিল ছুঁড়ে ফল পারা ছিল
আর ছিল পড়ন্ত সুর্য্যের রক্তিম আলোর সাথে
গাছগুলোর মিলনের মায়াবী দৃশ্য।
রাস্তায় যেতে যেতে
মনপ্রাণ যেত ভরে
আবেশে জুড়াত চোখ ।
গাছগুলো আস্তে আস্তে
সব কাটা পড়ল
কাঁচা মাটীর রাস্তা পাকা হল
চওড়া থেকে আরও চওড়া হল
ঝাঁ চকচকে রূপ পেল
পায়ে চলার রাস্তায় মোটর চলল, বাস চলল
যন্ত্রদানবের নিসৃত ধোঁয়ার গন্ধে
ভিজে মাটীর সোঁদা গন্ধ, ফুলের গন্ধ
কোথায় সব হারিয়ে গেল।
একই পথে যাতায়াত এখনও আছে
নেই শুধু সেই পরিচিত বাহা্রী ফুলের
রঙ্গীন বড় বড় গাছ।
পাখীগুলোও কোথায় চলে গেছে উড়ে
পরিচিত সেই ভীষন পরিচিত
ছোটবেলার অতি প্রিয় জায়গাটা
কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।